শিরোনাম
রাণীনগরে আলোচিত মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার-বরেন্দ্র নিউজ ভোলাহাটে বিজয় দিবসে জামায়াতের র‍্যালী-বরেন্দ্র নিউজ গোমস্তাপুরে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত-বরেন্দ্র নিউজ ভোলাহাটে গোহালবাড়ী ইউনিয়ন বিএনপির ত্রি-বার্ষিক কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত-বরেন্দ্র নিউজ ভোলাহাটে বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্র সংস্কারের দাবিতে আলোচনা সভা-বরেন্দ্র নিউজ ভোলাহাট উপজেলা বিএনপি’র ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত-বরেন্দ্র নিউজ গোদাগাড়ীতে ৫০ গ্রাম হিরোইনসহ দুই মাদক ব্যবসায়ী আটক-বরেন্দ্র নিউজ গোমস্তাপুর ইউনিয়ন বিএনপির ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল অনুষ্ঠিত-বরেন্দ্র নিউজ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা জামায়াতের উদ্যোগে দিনব্যাপী শিক্ষা শিবির অনুষ্ঠিত-বরেন্দ্র নিউজ ভোলাহাটে শিবিরের কুইজ প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ-বরেন্দ্র নিউজ ভোলাহাটে ইউনিয়ন লিগ্যাল এইড কমিটির ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠিত-বরেন্দ্র নিউজ
পাঠক যখন চুলকায়

পাঠক যখন চুলকায়

পাঠক যখন চুলকায় -শামীম কবীর
শরীরে চুলকানি হয়। চুলকাতে ভালো লাগে। ভালো কথা। চুলকাতে থাকুন। চুলকান। প্রয়োজনে চুলকাতে হয়। আবার অগত্যা চুলকাতে হয়। না চুলকিয়ে থাকা যায় না। কিন্তু অতিরিক্ত চুলকালে কী হয়? ঘা। আমরা জানি, দেশি ওলকচু খেলে মুখ চুলকায়। দেশি কচু শাক খেলে মুখ চুলকায়। অবশ্য এগুলোতে টক জাতীয় যেমন আচার, লেবু মেশালে সে চুলকানি আর থাকে না। সেটা ভিন্ন কথা।

কিন্তু এটা আবার কেমন কথা ‘পাঠকও চুলকায়’। হ্যাঁ, পাঠকও চুলকায়। পাঠক ট্রাজেডি উপন্যাস পড়ে। তখন চুলকায়। কেমন করে? গায়ে, হাতে, পায়ে চুলকানি আসে? না। চুলকানি আসে তার মনে। মনের উপর প্রভাব পড়ে সে উপন্যাসের। তার অন্তকরণে অন্য একধরণের অনুভূতি কাজ করে। এটা একধরণের চুলকানি। কচু শাক খেলে চুলকাবে কেন, শুধু খেয়েই যাব- এ প্রশ্নটি যেমন অবান্তর। তেমনি ট্রাজেডি উপন্যাস পড়ে আলাদা অনুভূতিটা আসবে না- এটিও অবান্তর। তবে খুব কম পাঠকেরই এক্ষেত্রে হয়তো ব্যতিক্রম হয়। হতে পারে। হয়ে থাকে। ভিন্ন অর্থে তার উপর আগের পাঠকের ন্যায় সেরুপ প্রভাব পড়ে না। পড়লেও তা খুবই কম। কিন্তু আগের পাঠক পড়ে ট্র্যাজেডিতে হিপনোটাইজ হয়ে যায়। তখন সে তাতে ব্যাথা অনুভব করে। একটি উপন্যাস হয়তো সে তিন-চার দিনের মধ্যে পড়ে শেষ করে। কিন্তু সপ্তাহ ধরে তার প্রভাব পড়ে।

একইভাবে, রোমান্টিক উপন্যাস পড়লে পাঠকের আরেক ধরণের অনুভূতি কাজ করে। চুলকানি আসে। সব জায়গায় শুধু প্রেম দেখে। অন্তরে এক ধরণের সুড়সুড়ি থাকে। সুড়সুড়ির ঠ্যালায় নাওয়া-খাওয়াও ভুলে থাকে। এটাও চুলকানি। চুলকানি শব্দটি রুপকার্থে। ধরুণ, আপনি একটি দলের কর্মী। আপনারও সুড়সুড়ি থাকে। চুলকানি থাকে। কোথায়? বিরোধী দলের কাজে। অন্য দলের সংবাদে। অন্য দলের প্রধান হয়তো হাটতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে গিয়েছে। নিউজ হয়েছে। আপনার চুলকানি শুরু। আপনি নিউজটিতে ঠুস করে একটা লাইক দিয়ে দিলেন। সুড়সুড়ির ঠ্যালায় মন্তব্য লিখে ফেললেন- ঠিক হয়েছে। দেশে কোনো খুন হয়েছে। কোনো ধরণের প্রমাণ কিংবা সামান্যতম প্রমাণ ছাড়াই বলে ফেললেন- এখানে ওই দলের প্রধানের হুকুম রয়েছে। এটাও চুলকানি। এভাবে পাঠক চুলকায়। এটা খারাপ চুলকানি। উল্টোটাও হতে পারে। হয়ে থাকে। একইভাবে, বিরোধী দলের কর্মী আপনার ভাল-মন্দ সব জায়গাতেই উল্টো-পাল্টা মন্তব্য করে। আপনার মন্দতে মন্দ কিংবা সমালোচনা আসতে পারে। এটা স্বাভাবিক। কিন্তু পাঠক আপনার ভালোতেও উল্টো মন্তব্য লিখে। দেশে মহামারী রোগ দেখা দিয়েছে।

এখানে হয়তো আপনার দলের কোনো হাত নেই। হ্যাঁ, আছে। ভিন্ন অর্থে- হয়তো আপনার জনপ্রতিনিধিরা আগে থেকেই এটাতে সোচ্চার হয়নি। যেটা উচিত ছিল। জনগণের অধিকার ছিল। কিন্তু, হয়নি। এটাতে অবশ্যই আপনি দায়ী। কিন্তু মহামারী যখন প্রকট আকার ধারণ করেছে। কারো কোনো হাত নেই। তখনও দেখেন মহামারীতে আপনার দলের কর্মীকে দায়ী করা হচ্ছে। এ ধরণের সংবাদে আষ্টেপুষ্টে বিরুপ মন্তব্য লিখেই যাচ্ছে। এটাও চুলকানি। অন্যকে সহ্য করতে না পারার চুলকানি। উল্টোটাও হতে পারে। হয়ে থাকে। আপনি একটি ধর্মানুসারী। আপনার ধার্মিকতা আছে। স্যালুট। এটা বজায় রাখুন। এটাই আসলে কথা। কিন্তু আপনার দেশ কিংবা বিদেশে অন্য ধর্মের লোককে কেউ আগুনে পুড়ালো। এটা নিশ্চয়ই জঘন্য এবং অপরাধ। তারপরও কেনজানি আপনার মধ্যে একধরণের চুলকানি আসে। আপনি এ সংক্রান্ত একটি খবর পড়লেই ঠুস করে শেয়ার করেন। আর আগুনে পুড়ানো মৃত লোকটাকে একধরণের অপরাধী কিংবা যে তাকে পুড়িয়েছে তাকে তার পক্ষ নিয়ে স্ট্যাটাস দেন। লেখালেখি করেন। কারণ কী?- সে অন্য ধর্মের।

অন্যদিকে, আপনার কোনো বিপদে আগের লোকটির ধর্মের অনুসারীরা আপনার ধর্মীয় গোষ্ঠী উদ্ধার করে ছাড়ে। তারাও চুলকায়। ভালো-খারাপ বিবেচনা করে খুব কম। সেটা তাদের চুলকানি। সুড়সুড়ি। এভাবে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হতে পারে। না হলেও একটা ধর্মীয় মনোমালিন্য তৈরি হয়। যা মূলত পরবর্তী কোনো দাঙ্গার বারুদ হিসেবে কাজ করতে পারে। উল্টোটাও হয়ে থাকে। হতে পারে।

এরকমই নানা পাঠে চুলকায় পাঠক। সুড়সুড়ি আসে তার। একটি বিষয় পড়ে ভারসাম্য আনতে পারে না। বেশির ভাগ পাঠকেরই এ অবস্থা। যখন যা পড়ে, তা-ই বিশ্বাস করে। সেভাবেই চিন্তা করে। কিন্তু পড়ে নিজের মতো করে সাজিয়ে নিতে পারে না। এই যে চুলকানির কথা বললাম, এটা আসলে রুপক এবং বাস্তব। চুলকানি শব্দটি সাধারণত খারাপ অর্থে ব্যবহৃত। কিন্তু এর ভালো-খারাপ উভয়ই আছে। এখানেও তাই লেখা হয়েছে। শরীরে যেমন চুলকানি হয়। চুলকাতে ভালো লাগে। ভালো কথা। কিন্তু অতিরিক্ত চুলকালে কী হয়? ঘা। সবমিলিয়ে চুলকানি ভালো-খারাপ উভয়ই।

পাঠক তা নির্ধারণ করতে পারে। সে কোনটা বেছে নিচ্ছে। কিভাবে চিন্তা করছে। এটাও হবে যে, এই লেখাটা পড়ে অনেক পাঠকই চুলকাবে। ভালো কিংবা খারাপভাবে। সেটা পাঠকের ব্যাপার। লেখক: শিক্ষার্থী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




<figure class=”wp-block-image size-large”><img src=”http://borendronews.com/wp-content/uploads/2020/07/83801531_943884642673476_894154174608965632_n-1-1024×512.jpg” alt=”” class=”wp-image-17497″/></figure>

© All rights reserved © 2019 borendronews.com
Design BY LATEST IT